৬ষ্ঠ শ্রেণির গণিত: তথ্য অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ অধ্যায়ের সকল স:জ্ঞা এবং ছোট প্রশ্নের উত্তর
1) তথ্য কাকে বলে?
পরিসংখ্যানীয়
অনুসন্ধানের জন্য অনুসন্ধান ক্ষেত্র হতে যে সকল গুণবাচক বা সংখ্যাবাচক রাশি সংগ্রহ
করা হয়, তাকে তথ্য বলে।
2) উপাত্ত কাকে বলে?
সংখ্যা
দ্বারা প্রকাশিত ও উপস্থাপিত তথ্যসমূহকে উপাত্ত বলে।
3) উপাত্ত এবং তথ্য এর মধ্যে পার্থক্য লিখ।
উপাত্ত এবং তথ্য এর পার্থক্য |
|
উপাত্ত বা Data |
তথ্য বা Information |
তথ্যের
কাঁচামাল হিসাবে উপাত্ত ব্যবহার করা হয়। |
উপাত্ত
প্রক্রিয়াকরণের পর তথ্যে রূপান্তরিত হয়।। |
ডেটা
বা উপাত্ত অর্থহীন এবং মূল্যহীন। |
তথ্য
মূল্যবান। |
ডেটা
বা উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের আগের অবস্থা। |
তথ্য
প্রক্রিয়াকরণের পরের অবস্থা। |
উপাত্ত, তথ্যের
উপর নির্ভরশীল নয়। |
তথ্য, data বা
উপাত্তের উপর নির্ভর করে। |
ডাটা
সরাসরি ব্যবহার করা যাবে না। |
অন্যদিকে
তথ্য সরাসরি ব্যবহার করা যেতে পারে। |
4) পরিসংখ্যান কাকে বলে?
পরিসংখ্যান হলো উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা এবং উপাত্ত সহজে পরিবেশন নিয়ে কাজ করা এক ধরনের গাণিতিক বিজ্ঞান।
5) অবিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে?
যে উপাত্তগুলো কোনো বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সাজানো থাকে না তাকে অবিন্যস্ত
উপাত্ত বলে।
6) বিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে?
যে উপাত্তগুলো কোনো বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণিতে
সাজানো থাকে তাকে বিন্যস্ত
উপাত্ত বলে।
7) কেন্দ্রীয় প্রবণতা বলতে
কি বুঝ?
তথ্য উপাত্তের কেন্দ্রের দিকে পুঞ্জিভূত হওয়ার প্রবণতা কে কেন্দ্রীয়
প্রবণতা বলে।
8) গড় কাকে বলে?
কতগুলো রাশির যোগফলকে তাদের রাশির সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে
যে ফল পাওয়া যায় তাকে ঐ রাশিগুলোর গড় বলা হয়।
9) মধ্যক কাকে বলে?
কোনো পরিসংখ্যানের উপাত্তসমূহ মানের ক্রমানুসারে সাজালে যে
উপাত্ত সমান দুইভাগে ভাগ করে সেই মানকে ঐ উপাত্তের মধ্যক বলে।
10) প্রচুরক কাকে বলে?
কোনো
পরিসংখ্যানে বর্ণিত উপাত্তসমূহের মধ্যে যে উপাত্তটি সর্বাধিকবার থাকে উক্ত
উপাত্তের প্রচুরক বলে।
11) পরিসর কাকে বলে?
রাশিমালার ব্যবহৃত রাশির ক্ষুদ্র ও বৃহৎ মানের ব্যবধানকে
পরিসর বলে।
12) উপাত্ত কত প্রকার ও কি কি?
উদাহরণসহ স:জ্ঞা দাও।
উপাত্তের প্রকারভেদ:
উৎস ভিত্তিতে উপাত্ত ২ ধরনের যথাঃ
(ক) প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত
(খ) মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত
প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত
সরাসরি উৎস থেকে সংগ্রহ করা তথ্যকে প্রাথমিক উপাত্ত বলা হয়।
এই ধরনের তথ্য ব্যবহার করে গবেষণা বা পরিসংখ্যানের ফলাফল বেশি নির্ভরযোগ্য হয় কারণ
এতে পক্ষপাত বা ভুলের সম্ভাবনা কম থাকে।
যেমনঃ বার্ষিক পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ফলাফল এর
উপাত্ত
মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্ত
যখন সরাসরি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব না হয়, তখন
পরোক্ষভাবে সংগ্রহ করা তথ্য ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের তথ্যকে মাধ্যমিক বা পরোক্ষ
উপাত্ত বলা হয়। পরিসংখ্যান বা গবেষণায় মাধ্যমিক উপাত্ত ব্যবহার করলে ফলাফলের
নির্ভরযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা কমে যেতে পারে।
যেমনঃ বিশ্বের বিভিন্ন শহরের তাপমাত্রা বা বৃষ্টিপাত
সংশ্লিষ্ট উপাত্ত
তথ্যের বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে উপাত্ত ২ ধরনের যথাঃ
(ক) বিন্যস্ত উপাত্ত
(খ) অবিন্যস্ত উপাত্ত
বিন্যস্ত উপাত্ত
সংগৃহীত তথ্যকে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে সাজানো হলে তাকে
বিন্যস্ত উপাত্ত বলে। এই তথ্যগুলি মান, অক্ষর, বা অন্য কোন বৈশিষ্ট্য অনুসারে
ক্রমবর্ধমান বা হ্রাসক্রমে সাজানো যেতে পারে। বিন্যস্ত তথ্য ব্যবহার করা সহজ এবং
ভুলের সম্ভাবনা কম থাকে।
যেমন: ৫ জন ছাত্র-ছাত্রীদের ওজন যথাক্রমে, ৪৯, ৫২, ৫৫, ৫৭, ৬৩ কেজি।
অবিন্যস্ত উপাত্ত
যখন সংগৃহীত তথ্যকে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে সাজানো
সম্ভব হয় না, তখন
সেই তথ্যকে অবিন্যস্ত উপাত্ত বলা হয়। এই তথ্যগুলি এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে থাকে এবং কোন
নির্দিষ্ট ক্রম অনুসরণ করে না।
যেমনঃ ৫ জন শিক্ষার্থীদের ওজন যথাক্রমে, ৫২, ৫৭, ৫৫, ৬১, ৪৯ কেজি।
উপত্যের বৈশিষ্ট্যর ভিত্তি অনুযায়ী উপাত্তকে ২ ভাগে ভাগ
করা হয়েছে যথাঃ
(ক) গুণবাচক উপাত্ত
(খ) পরিমাণবাচক উপাত্ত
গুণবাচক উপাত্ত
গুণবাচক উপাত্ত হল এমন তথ্য যা কোন বস্তু বা ঘটনার বর্ণনা, বৈশিষ্ট্য, বা অবস্থা
সম্পর্কে ধারণা দেয়। এই ধরনের তথ্য সংখ্যার পরিবর্তে শব্দ, ছবি, বা অন্যান্য
মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
যেমনঃ মানব দেহে ওষুধ, টীকা বা ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা।
পরিমাণবাচক উপাত্ত
পরিমাণবাচক উপাত্ত হল এমন তথ্য যা সংখ্যা, দৈর্ঘ্য, ওজন, বা অন্যান্য
পরিমাপযোগ্য একক ব্যবহার করে কোন বস্তু বা ঘটনার পরিমাণ নির্দেশ করে। এই ধরনের
তথ্য সংখ্যা, গ্রাফ, বা চার্টের
মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।
যেমনঃ জরিপ, মানুষের বয়স, আয়, নম্বর
ইত্যাদি।
13) শ্রেণিব্যপ্তি কি?
প্রতিটি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্রত্তম সংখ্যা এবং
বৃহত্তম সংখ্যার পার্থক্য কে ওই শ্রেণীর ব্যাপ্তি বলে।
14) গণসংখ্যা বলতে কি বুঝ?
কোনো শ্রেণির দুটি সীমার মধ্যে যতগুলো সংখ্যা পাওয়া তাকে ঐ
শ্রেণির গণসংখ্যা বলে।
15) গণসংখ্যা নিবেশন সারণি বলতে
কি বুঝ?
যে সারণির মাধ্যমে
উপাত্ত সমূহকে নির্দিষ্ট শ্রেনি ব্যাবধান ও শ্রেনি সংখ্যা নির্ধারণের মাধ্যমে
বিন্যস্ত করা হয় গণসংখা নিবেশন
সারণি বলে।
16) অজিভ রেখা কাকে?
অবিচ্ছিন্ন উপাত্তের শ্রেণী ব্যবধানের উচ্চসীমার বিপরীতে
ক্রমযোজিতগণসংখ্যানির্দেশক বিন্দুসমূহ যোগ করলে যে উর্ধগামী রেখা পাওয়া যায় তাকে
অজিত রেখা বলে।
17) স্তম্ভলেখ কাকে বলে?
যে লেখ বা চিত্রের মাধ্যমে উপাত্তকে কতগুলো স্তম্ভ বা দন্ডের
উচ্চতার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় তাকে স্তম্ভলেখ বা দন্ডচিত্র বলে।
18) বহুভূজ কাকে বলে?
একই সমতলে অবস্থিত কতকগুলো রেখাংশ তাদের প্রান্তবিন্দুতে
পরস্পর যুক্ত হয়ে যে বদ্ধ সমতলীয় আকৃতি তৈরি করে তাকে বহুভুজ বলে।
19) ট্যালি চিহ্ন কি?
পরিসংখ্যান অংকের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত উপাত্তসমূহকে সংখ্যার
পরিবর্তে “/” এরকম
বিশেষ এক ধরনের চিহ্নের মাধ্যমে
প্রকাশ করা হয়। এই চিহ্নকেই ট্যালি চিহ্ন বলে।
20) চরম
মান কাকে বলে?
কোনো উপাত্তসেটের এক বা একাধিক উপাত্ত অন্য উপাত্তসমূহের তুলনায়
অস্বাভাবিকভাবে বড় বা ছোট হলে তাকে চরম মান বলে।